ডেস্কে রিপোর্টঃ
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়িতে ১২অবৈধ ইট ভাটায় ইট তৈরির কাজে ব্যাবহার হচ্ছে পাহাড়ের মাটি জ্বালানি হিসাবে ব্যবহারের হচ্ছে বনের কাঠ।
প্রশাসনের অভিযানের পর ও পুরুদমে চলছে।
বাইশারি, ঘুমধুম, সহ নাইক্ষ্যংছড়ি র ১২ ইট ভাটা
প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি এলাকা বাসীর।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডস্থ ২৬৮ নং রেজু মৌজা, রেজু বিট কর্মকর্তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত রেজু আমতলী নামক জায়গাই বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্তের পিলার নং ৪১ ও ৪২-এর মধ্যবর্তী এলাকা থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে,দখলীয় ও পরিত্যক্ত বনভূমিতে একদল সংঘবদ্ধ চক্র ৫ টন ক্ষমতাসম্পন্ন (CAT-5) স্কেভেটর ব্যবহার করে দিনরাত পাহাড় কেটে অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণ ও গাছ কাটার কার্যক্রম চালিয়ে বনভূমি ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে,স্থানীয়, জমির উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম,শাহাবুদ্দিন।
উক্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট রেজু বিট অফিসারের দায়িত্বাধীন হওয়া সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এই অবৈধ কার্যক্রম চলমান থাকায় দায়িত্বে অবহেলা প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ সহযোগিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য যে—
সরকারিভাবে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে ঘুমধুম ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় অবৈধভাবে একাধিক ইটভাটার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে দৈনিক ৩ টনের অধিক কাঁচা কাঠ ব্যবহৃত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ কার্যক্রম চলমান থাকায় সমতল এলাকায় পর্যাপ্ত গাছপালা না থাকায় পাহাড়ি বনভূমিকেই অবৈধ জ্বালানির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে একটি সংঘবদ্ধ বনদস্যু চক্র পাহাড় কেটে নির্বিচারে বন উজাড় করে চলেছে।এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে, সিলেটের সাদা পাথরের মত এই অঞ্চলও ভবিষ্যতে মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মী মোঃ কফিল উদ্দিন বলেন,
বিষয়টি তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা। ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করা স্কেভেটরসহ অবৈধভাবে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জব্দ এবং সংশ্লিষ্ট বনদস্যু ও ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে বন আইন ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
দায়িত্বে অবহেলা বা সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বন সংরক্ষণে নিয়মিত নজরদারি ও জবাবদিহি ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।
এছাড়া
নাইক্ষ্যংছড়ি ও ঘুমধুম ইউনিয়নজুড়ে বন্ধ ঘোষিত ইটভাটাগুলো আবারও সচল হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক যোগসাজশের অভিযোগের মধ্যে দিয়ে। জুলাই বিপ্লবের পর আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ বৈঠকে পরিবেশগত ঝুঁকি ও অনিয়মের কারণে মোট ১২টি ইটভাটা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বাস্তবে এসব ইটভাটা এখনো পুরোপুরি সচল।
স্থানীয় সূত্র জানায়—তালিকাভুক্ত প্রকৃত মালিকরা থাকলেও এখন বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা নিজেদের মালিক পরিচয় দিয়ে ইটভাটার নিয়ন্ত্রণ দখলে নিয়েছেন। প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে তারা বন্ধ নির্দেশকে কার্যত অকার্যকর করে রেখেছেন।
মাঝেমধ্যে দুই-একটি ইটভাটায় নামকাওয়াস্তে অভিযান চালিয়ে বাহ্যিকভাবে ‘কর্তৃপক্ষ কঠোর’—এমন চিত্র দেখানো হলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, এগুলো কেবল বৈধতার ঢাল তৈরির চেষ্টা।
ইটভাটা সংশ্লিষ্ট প্রকৃত মালিকদের তালিকা
হায়দার কোম্পানি (HKB)
মিলন মিস্ত্রি (HSB)
সাজু বড়ুয়া (DSB)
ফরিদ কোম্পানি (BBM)
ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন (BHB) — উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা
আবুল কালাম মেম্বার (KRS) — ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা
খালেদ সরওয়ার হারেজ (KRE) — ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি
বাবু (HAZI)
রাজনৈতিক দখলদারিত্বের অভিযোগ
অভিযোগ রয়েছে—
যদিও উপরোক্ত ব্যক্তিরাই প্রকৃত মালিক, বাস্তবে রাজনৈতিক নেতারাই এখন ইটভাটাগুলোর মালিক সেজে নিয়ন্ত্রণ করছেন। শ্রমিক নিয়োগ, কয়লা সরবরাহ, উৎপাদন, বিক্রি—সবকিছুতেই তাদের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।
স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয়দের ভাষ্য
“নামমাত্র কিছু অভিযানে ছবি তোলে দেখানো হয়, কিন্তু ইটভাটার আগুন কখনোই নেভে না। প্রশাসন কি জানে না, নাকি দেখেও না দেখার ভান করছে—এটা সাধারণ মানুষের বড় প্রশ্ন।”
পরিবেশ দূষণ, কৃষিজমি ক্ষতি ও ধুলাবালুতে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে গেলেও বাস্তবিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
উপজেলা প্রশাসনের সাড়া মেলেনি
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের অবস্থান জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি জানা সম্ভব হয়নি।
সচেতন মহলের দাবি
নাইক্ষ্যংছড়ির নাগরিক সমাজ বলছে—
জুলাই বিপ্লবের পর নেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়া প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
তারা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের তদন্ত এবং বন্ধ ঘোষিত ইটভাটাগুলোতে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
All rights reserved © 2020 paharechok.com||
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি